রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, "আর যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা গড়ে ওঠে তার জন্য দোযখের আগুনই উত্তম।" [সহিহ জামিউস সগির : ৮৬৪৮]
ক্যাসিনো, মদ, জুয়া কোন কিছুকেই উপর্জানের মাধ্যম হিসেবে বাদ দিচ্ছেন না কেউই; কিন্তু কেউই মনে করছেন আল্লাহ এসব ব্যবসা সম্পর্কে কি বলেছেন!
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে, সে কোথা হতে সম্পদ উপার্জন করল, হালাল হতে না হারাম হতে। [বুখারি : ২০৫৯]
আবার এই হারাম ব্যবসা থেকে উপর্জিত অর্থ থেকে অনেকে জাকাত দেন, মসজিদ বানাতে সাহায্য করেন; কিন্তু এটা মনে করেন কেউই, "আল্লাহ তাআলা পবিত্রতা ছাড়া কোনো সালাত কবুল করেন না, আর হারাম উপার্জনের দানও আল্লাহ তাআলা কবুল করেন না।" [সহিহ ইবনে খুজাইমাহ : ১০]
ব্যক্তি ও সমাজের ওপর হারাম উপার্জনের প্রভাব খুবই মারাত্মক। হারাম উপার্জনের ফলে মানবজীবনের সব ধরনের বরকত ছিনিয়ে নেয়া হয়। রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। আর্থিক অনটন-সংকট দেশে-সমাজে শক্তভাবে শিকড় গেড়ে বসে। বেকারত্ব অভিশাপ আকারে প্রকাশিত হয়। জুলুম, অন্যায়, প্রতিহিংসা ও রেষারেষির সয়লাব ঘটে। যারা হারাম খায়, পরিবার-পরিজন, ছেলে-সন্তানদের হারাম অর্থে লালন করে, তারা মারাÍক ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত হয়। তাদের উদাহরণ সাগরের পানি পানকারীর মতো। যতই সে পান করে, ততই তার তেষ্টায় আগুন ধরে। এরা অল্পে তুষ্ট হতে নারাজ, আবার অধিক পেয়েও থেকে যায় অখুশি। এরা হারামকে মনে করে সুস্বাদু-সুখাদ্য। বর্তমান যুগে তো হারাম খাওয়ার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে। কলাকৌশলে যে যত বেশি সম্পদ একত্রিত করতে পারে মানুষ তাকে তত বেশি চালাক ও বিচক্ষণ বলে। আর হালাল খেয়ে অল্পে তুষ্ট থাকা মানুষকে বর্তমান সমাজে বোকা বলে অভিহিত করা হয়। বড়ই আফসোসের বিষয় হচ্ছে বর্তমান যুগের স্ত্রীরাও তাদের পুরুষদের হারাম সম্পদ দু’হাতে লুটে নিতে উৎসাহ জোগায়। বর্তমান যুগে হারাম খেয়ে কেউ বমি করা তো দূরে থাক, সবাই বরং তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে। জনৈক নেককার ব্যক্তির স্ত্রী তাকে উপদেশ দিয়ে বলেছিল, হে আমার প্রিয় স্বামী! আমাদের রিজিকের ব্যাপারে আপনি আল্লাহকে ভয় করুন। কেননা আমরা ক্ষুধায় ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারব, কিন্তু জাহান্নামের আগুনে জ্বলার ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করা আমাদের সাধ্যের বাইরে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হারাম উপার্জন থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!
0 Comments