"আল্লাহ কি সত্যিই আমাদের ভালোবাসেন"
শাইখ আলী তানতাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, 'একবার আমার জানতে ইচ্ছা হলো, আল্লাহ কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসেন? আগ্রহ ও কৌতূহল এ জায়গা থেকে আমি এর উত্তর পেতে চাইলাম কুরআন থেকে। কুরআন খুলে দেখতে লাগলাম যে,আল্লাহ কাদের ভালোবাসেন? কী তাদের বৈশিষ্ট্য?আমি কুরআন খুলে দেখলাম, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা নেককারদের ভালোবাসেন। ভাবলাম, 'আমি কি নেককার বান্দা? মনে হলো, না। তাহলে তো আমি এই তালিকা থেকে বাদ পরলাম ।
তারপর দেখলাম, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন, কিন্তু নিজেকে খুব বেশি ধৈর্যশীল বলে মনে হলো না আমার। ফলে এ তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেলাম।
এরপর দেখলাম আল্লাহ মুজাহিদদের ভালবাসেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে; কিন্তু আমার মতন অলস আর অক্ষম ব্যক্তি এই তালিকায় ওঠার কথা ভাবতেও পারি না। ফলে এখান থেকে ছিটকে গেলাম।
তারপর দেখলাম, আল্লাহ তাদের ভালবাসেন, যারা সৎ কাজে এগিয়ে; কিন্তু নিজের আমল, আর আখলাকের দৈন্যদশা দেখে এই তালিকাতেও নিজেকে ভাবা গেল না।
একপ্রকার হতাশার গ্লানিবোধ নিয়েই আমি কুরআন বন্ধ করে ফেলি। নিজের আমল, তাকওয়া আর ইখলাসের দিকে তাকিয়ে আমি তাতে রাজ্যের ভুল-ভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পেলাম না। কিন্তু একটু পরেই আমার মনে হলো, 'হ্যাঁ, আল্লাহ তো তাদেরও ভালবাসেন যারা তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
মনে হলো, এই একটা বৈশিষ্ট্যই বুঝি আমার জন্য মজুদ আছে এবং আমি তা যখন-তখন নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারি। আমি খুব বেশি পরিমাণ ইস্তেগফার পড়তে থাকি,যাতে করে আমি আল্লাহর সেসব বান্দাদের তালিকাভুক্ত হতে পারি,যারা অধিক পরিমাণে তওবা করে এবং যাদের আল্লাহ ভালোও বাসেন।
আমরা হয়তো-বা নেককার হতে পারলাম না,আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদ হওয়ার সৌভাগ্য হয়তো আমাদের কপালে নেই। অনুপম ধৈর্য্যের অধিকারী কিংবা যারা বেশি ভালো কাজে অগ্রগামী তাদের দলভুক্ত হয়তো হতে পারলাম না; কিন্তু তাই বলে কি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার ভালোবাসার তালিকা থেকে একেবারে বাদ পড়ে যাবো? কখনোই নয়।আল্লাহ প্রিয়ভাজন হওয়ার একটা রাস্তা সদা-সর্বদা খোলা রয়েছে আমাদের জন্য। আর সেই রাস্তা হলো- তাওবার রাস্তা অধিক পরিমাণে তওবা করা। আল্লাহর কাছে নিজের পাপ নিজের ভুল, নিজের অবাধ্যতার জন্য কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাওয়া।
ভুল করেও ভুলের উপর স্থির থাকা এবং সেই ভুলকে যুক্তি-তর্ক দিয়ে জায়েজ বানানোর চেষ্টা করাটা শয়তানের বৈশিষ্ট্য।
অপরদিকে ভুল করার পর তা বুঝতে পারা, তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া,তা থেকে বিরত হওয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া একটা সতেজ, সুন্দর এবং সবুজ অন্তরের প্রমান বহন করে। নিজেদের কৃত ভুল বুঝতে পেরে, তার জন্য অনুতপ্ত হয়ে, গভীর অনুশোচনাসহ আল্লাহর কাছে করজোড়ে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া।
ভুল হয়ে গেলে তা নিয়ে অন্তর পেরেশানি দেখা দেওয়াটা তাকওয়ার লক্ষণ।
তাই কখনো ভুল হয়ে গেলে,কখনও পাপ কাজ হয়ে গেলে, তার জন্য অনুশোচনা করা, কিছু সদকা করা,নফল সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারলে অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমা করবেন।
আর এভাবে করেই আল্লাহর কাছ পর্যন্ত পৌঁছা যাবে ইনশাআল্লাহ
(এবার ভিন্ন কিছু হোক আরিফ আজাদ ভাইয়ের লেখা বই থেকে)
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!
0 Comments