সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পানকারী জান্নাতে যাবে না



আজ মানবসভ্যতার চরম শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে মাদক। মাদকের ভয়াল থাবায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে দেশের সব স্তরের মানুষ। বাদ যাচ্ছে না উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরাও। তছনছ হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য পরিবার। চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণসহ অনেক অপরাধই হচ্ছে মাদকের জন্য। মাদকসেবীরা তাদের অর্থ জোগান দিতে এমন কোনো অন্যায় ও গর্হিত কাজ নেই যে করছে না।

আমরা মুসলিম। আমাদের ধর্ম ইসলাম। আর ইসলাম হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। আমাদের উচিত ইসলাম অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনা করা। আর এটাই ঈমানের দাবি। ইসলাম মানবকল্যাণময় এক ধর্ম। আজকের পৃথিবীতে মাদকের ছড়াছড়িতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। মানবসভ্যতাকে সংরক্ষণের লক্ষ্য সামনে রেখে আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগেই ইসলাম মাদকের কুফল সম্পর্কে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। মাদকদ্রব্যের আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘খমর’। যেসব বস্তু সেবনের ফলে মাদকতা সৃষ্টি হয় এবং বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে অথবা বিবেকবোধের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে তাকে ইসলামের ভাষায় ‘খমর’ বা মাদক বলা হয়।


মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, 'হে মুমিনগণ! এই যে মদ, জুয়া এবং ভাগ্যনির্ধারক শরসমূহ (তৎকালীন প্রচলিত এক ধরনের জুয়া) এসব কিছু শয়তানের কাজ বৈ অন্য কিছু নয়। অতএব এগুলো থেকে দূরে থাকো। যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও'। (সূরা মায়িদা, ৯০)


ওই আয়াতে মাদকসংশ্লিষ্ট সবকিছুকে শয়তানের জঘন্য কাজ বলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা: হতে বর্ণিত হাদিসে মাদকাসক্তদের প্রতি কঠোর ভর্ৎসনা করে রাসূল সা: এরশাদ করেন, যদি কেউ মদ পান করে আল্লাহ তায়ালা তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল করেন না। আর মদ্যপ অবস্থায় কেউ মৃত্যুবরণ করলে তবে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে।


অন্য এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, মদ সব অশ্লীলতার মূল ও মারাত্মক কবিরা গোনাহ যা ক্ষমার অযোগ্য। যতক্ষণ না সে তার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তাওবা না করে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করবেন না।


হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, 'সব নেশাজাতীয় দ্রব্যই খমর তথা মাদকের অন্তর্ভুক্ত। আর সব ধরনের মাদকই হারাম'। (মুসলিম)


মাদকসেবীদের মাদকাসক্তি থেকে বিরত রাখতে অনেক কিছুই করা হচ্ছে আজ। কিন্তু মাদকাসক্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে লাগামহীনভাবে। যত কিছুই করা হোক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত মাদকসেবীদের অন্তরে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করা না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের মাদক থেকে দূরে আনা যাবে না। আর আল্লাহর ভয় তখনই সৃষ্টি হবে যখন ইসলামী শিক্ষা চর্চার মাধ্যমে নিজেকে এবং নিজের দায়িত্ব কর্তব্য বুঝতে পারবে এবং নিজের প্রভুর পরিচয় লাভ করতে পারবে। সুতরাং মাদককে চির নির্মূল করতে প্রয়োজন মাদকসেবীদের ইসলামী শিক্ষার আলোকে আলোকিত করা। সন্তানকে শুরু থেকেই এমন একটা পরিবেশ ও শিক্ষা দিতে হবে যা সন্তানের স্বাভাবিক বিকাশে সহায়ক।



লেখাঃ জান্নাত বিনতে খায়ের (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)



 শেয়ার করুন, বন্ধুদের সাথে ইন শা আল্লাহ 


আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!

Post a Comment

0 Comments