-->

প্রাচুর্যের প্রতিযােগিতা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে ৷


হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে আমার তেমন জানাশোনা নেই। বলতে পারেন কখনো পড়ার আগ্রহ জাগেনি মনে। ইদানীং মানুষের 'ডিপ্রেশন' নিয়ে পোস্ট দেখে মনে চাইল একটু দেখি তো চিন্তা করে..

যে জিনিসটা আবিস্কার করলাম, মানুষ বড্ড প্রতিযোগিতা প্রিয়। অর্থ-সম্পদ, যশ-খ্যাতি, গাড়ী-বাড়ী, সুন্দরী নারী আরো কত কী! সবকিছুতে মানুষ নিজেকে একজন প্রতিযোগি রূপে দেখতে চায়। আসলে সুখের ভুল সংজ্ঞা মুখস্ত করে বড়ো হওয়া প্রজন্ম এসবকেই জীবনের চুড়ান্ত সফলতা মনে করছে। যদিও আফসোস! আর পরিতাপের বিষয় এই - আমরা তথাকথিত ভুল সংজ্ঞার চশমা লাগিয়ে, দুনিয়া উল্টে গেলেও সঠিকটা মানতে একদম প্রস্তুত নই। বস্তুবাদী জীবন দর্শন আমাদের ভুল সংজ্ঞায় ভুল জিনিসের লোভ দেখিয়ে সঠিকটা আড়াল করেছে আসলে। তাহলে প্রকৃত সুখ কোথায় পাব?

মানুষের প্রতিযোগিতা প্রিয় স্বভাবের ব্যাপারে কুরআনে একটি সূরাতে আল্লাহ বলছেন,

"প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে।" (সূরাহ তাকাসূর, আয়াত : ১)

ডিপ্রেশন নিয়ে কাঁড়ি কাড়ি কিতাবাদি আর হরেক কিসিমের আর্টিক্যাল ঘেটে আমরা হয়তো অনেক রকমের তথ্য পাব, ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা কেন মানুষকে ভর করে, কী তার কারণ ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এই রকম ম্যাসেজ শুধু কুরআন ই দিতে পারে। মানুষের স্রষ্টাই বলতে পারেন, আসলে তার সৃষ্টি করা মানুষগুলো কি চায়, তারা কোন বিষয়ের উপর এত আগ্রহী!

মানুষের মধ্যে 'আরো চাই' ব্যাপারটা তাকে অসুখী করে তুলবে, সে চাইতে চাইতে শেষ হয়ে যাবে তার চাওয়ার শেষ হবে না। না পেলে মন খারাপ হবে। সব সময় নিজেকে একজন প্রতিযোগি বানিয়ে অন্যের সামনে উপস্থাপন করবে। প্রতিযোগিতায় হারার ভয়ে, কিংবা হারার ফলে তার মন খারাপ হবে। সে অশান্তিতে ভুগবে। এটাই 'ডিপ্রেশন'।

এই জন্য ইসলামের আদলে বড় হওয়া মুসলিমদের পৃথিবীর সব থেকে বড় ফিলোসোফার শিক্ষা দিয়েছেন,

তোমরা পার্থিব ব্যাপারে তোমাদের থেকে কম সমৃদ্ধশালী মানুষের দিকে তাকাও, তোমাদের থেকে অধিক সম্পদশালী মানুষদের দিকে না। এতে করে তোমাদের দেয়া মহান আল্লাহর নেয়ামতগুলো তুচ্ছ মনে হবে না। (ইবনে মাজাহ : ৪১৪২)

যেকোন ব্যাপারে আমাকে আমার থেকে নিচে অবস্থানরত ব্যক্তির দিকে তাকাতে হবে। তার অবস্থার সাথে যখন নিজের অবস্থার কম্পেয়ার করব সুনিশ্চিতভাবে ভেতর থেকে একটা আওয়াজ বের হবে, 'আলহামদুলিল্লাহ' - সমস্ত প্রশংসা সেই সত্ত্বার যিনি আমাকে তাদের তুলনায় অনেক ভালো রেখেছেন।

যেখানে আমি আমার পার্থিব জীবনের সবকিছুর সবচে' সুন্দরতম এবং গ্রহণযোগ্য সমাধান পাব আমি কি সব জায়গায় সেই ধর্মকে টানব না? সবার নিকট একই কথা বারংবার পুনরাবৃত্তি করব না?

আসলে প্রকৃত শিক্ষিত ব্যক্তিরা শিক্ষিত হয় তখন, যখন তার মাঝে ধর্মীয় জ্ঞান থাকে অনথায় সে তো নামে শিক্ষিত কামে নয়!

লেখাঃ সিয়াম ভূঁইয়া (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

পোস্ট রেটিং করুন

আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

সম্পর্কিত পোস্টসমূহ

Facebook