তাঁর ক্ষমার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই


আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি হলেও আল্লাহ আপনার ছোট্ট কোনো কাজকে পছন্দ করে মাফ করে দিতে পারেন। হাদিসে এসেছে, রাস্তা থেকে কাঁটাযুক্ত একটি ডাল সরিয়ে দেওয়ার কারণে এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেন। [সহিহ বুখারি: ৬৫২, ২৪৭২, সহিহ মুসলিম: ১৯১৪]

কারণ তাঁর ক্ষমার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। এজন্য গোনাহ করলে হতাশ হবেন না; তবে লজ্জিত হবেন, অনুতপ্ত হবেন, মাফ চাবেন, কাঁদবেন, ভুল স্বীকার করবেন, দ্বিতীয়বার (একই গুনাহ) না করার ওয়াদা করবেন।

তবে শর্ত একটাই — শির্ক (আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা) থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে। কারণ তিনি নিজেই বলে দিয়েছেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর সাথে শরিক করা (শির্ক করা) ক্ষমা করবেন না। তা ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।" [সূরাহ আন-নিসা, আয়াত : ৪৮]

আল্লাহর কাছে কোয়ান্টিটির চেয়ে কোয়ালিটির দাম অনেক বেশি। আমল যাই করুন, সুন্দরভাবে করুন, ইখলাসের সাথে (শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য) করুন, সম্ভব হলে নিয়মিত করুন। কারণ, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল সেটাই, যা নিয়মিত করা হয়, যদিও তা পরিমাণে অল্প হয়।" [সহিহ বুখারি, ফাতহুল বারি: ৩/৩৮]

রিয়া (লোকদেখানো ইবাদত) থেকে বেঁচে থাকুন। প্রত্যেক কাজের শুরুতে, মাঝে, শেষে বারবার নিয়তকে যাচাই করুন, দেখুন কোনো ভেজাল আছে কীনা। থাকলে আস্তাগফিরুল্লাহ... আউযুবিল্লাহ... পড়ুন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ঐ আমল কবুল করেন না, যা তাঁর (সন্তুষ্টির) জন্য খালেস (একনিষ্ঠ) হয় না।" [নাসাঈ: ৩১৪০]

সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, "নিয়ত ঠিকঠাক রাখতে আমার যতটুকু কষ্ট করা লেগেছে, আর কোনোকিছুতে এত কষ্ট করতে হয়নি। কারণ আমার নিয়ত বারবার পাল্টে যায়।"

আরেকটি কাজ করতে হবে। কোনো মানুষের কোনো হক্ব (অধিকার) নষ্ট করে থাকলে সেটি ফিরিয়ে দিতে হবে। এই গুনাহটি আল্লাহ ততক্ষণ ক্ষমা করবেন না, যতক্ষণ ভিকটিম (ভোক্তভোগী) নিজে ক্ষমা না করবে। টাকা বা সম্পদের অধিকার নষ্ট করে থাকলে সব ফিরিয়ে দিতে হবে, নয়ত ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। তেমনি কারো গীবত করলেও তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "যদি কেউ (গিবত বা অপমান করে) কারো মর্যাদা নষ্ট করে বা অন্য কোনভাবে কারো প্রতি যুলুম করে থাকে, তবে সে যেন কিয়ামতের পূর্বে আজই তার থেকে মুক্তি নিয়ে নেয়; কারণ সে দিন কোন দিনার-দিরহাম (টাকা পয়সা) থাকবে না। যদি তার নেক আমল থাকে, তবে তার যুলুমের পরিমাণ অনুসারে নেক আমল নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি তার নেক আমল না থাকে, তবে তার সাথীর (যার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে) পাপ নিয়ে তার কাঁধে চাপানো হবে।" [সহিহ বুখারি: ২/৮৬৫, ৫/২৩৯৪]

আল্লাহ তাঁর নিজের অধিকারগুলোর ব্যাপারে ছাড় দিয়েছেন, মানুষের অধিকারের ব্যাপারে নয়। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া কবিরা গুনাহ।

আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!

Post a Comment

0 Comments