ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের ঘাম ঝরবে

ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের ঘাম ঝরবে

খুব বেশি দিন হয়নি ঘূর্নিঝড় আম্ফানের সাথে আমরা পরিচিত হয়েছিলাম। তাছাড়া বর্তমান পৃথিবীর দুর্দশাময় পরিস্থিতি আমাদের নিত্য নতুন দুর্যোগ, নিত্য নতুন নামের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে সৃষ্ট বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুত আমরা। প্রস্তুত আমাদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো। হয়তো আমরা ডুবে যাব, ডুবে যাবে আমাদের বসতি, বিলীন হয়ে যাবে পানির গভীরে, এজন্য আগাম কত প্রস্তুতি কত সতর্কতা আমাদের। দুনিয়ার এই দুর্যোগ সামাল দিতে আমরা যতটা না সতর্ক, আখেরাত সম্পর্কে ততটাই উদাসীন। হাশরের ময়দানের সেই কঠিন মুহূর্ত সম্পর্কে আমরা ততোটাই গাফেল যখন মানুষ স্বীয় ঘামে ডুবে থাকবে।

কেমন হবে সেই দিনটা? কি নিয়ে আমি আল্লাহর সামনে হাজির হব? আমার পরিস্থিতি কি হবে যদি রাব্বুল আলামীন আমার কাছে হিসেব চান? পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান সেই বিভীষিকাময় দিনটি কি আমার জন্য এতটাই লম্বা হবে? নাকি আল্লাহর অসীম অনুগ্রহে তা আমার জন্য যোহর এবং আসরের মাঝামাঝি সময়টুকু হবে, আমি জানি না। এই দিনটির জন্য আমার প্রস্তুতি‌ই বা কতটুকু? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,

“কখনো নয়, তোমরা তো প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করে থাক।” [সূরা আল ইনফিতার : ৯]

আজ আমরা বিচার দিবসে বিশ্বাস করেও না করার মতো কেননা আমরা কেবল মুখে বলাতেই সীমাবদ্ধ। আমরা ভুলে গেছি যে রবের সামনে দাঁড়াতে হবে। হাশরের ময়দানের করুণ একটি পরিণতি হচ্ছে সেদিন প্রত্যেক মানুষ তার নিজ পাপ অনুযায়ী ঘামতে থাকবে। পাপের পরিমাণ কারো এতোটাই বেশি হবে যে ঘাম তার নাক অব্দি পৌঁছে যাবে।

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের ঘাম ঝরবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে ডুবে যাবে, এমনকি কান পর্যন্ত।” [সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৫৩২]

এ ঘাম কেমন, দুনিয়ার মতো? না আমার ভাই ও‌ বোন এর ব্যাপারে কল্পনা করার সাধ্য আমাদের নেই তবে নিঃসন্দেহে তা হবে প্রচন্ড যন্ত্রনাদায়ক। সেদিন বড় বড় সাঁতারুরাও নাজেহাল হয়ে পরবে। অথচ আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত বান্দারা তাঁর আরশের ছায়ায় স্থান লাভ করবে। আমাদের কি হলো,আমরা কি মহান রবের সেই আরশের ছায়ায় থাকতে চাইনা? সেদিন এই আরশ ছাড়া যে আর কোনো ছায়াই থাকবে না।

আমরা চাইলেই পারি সেদিন ঘামের মধ্যে হাবুডুবু না খেয়ে আরশের ছায়ায় থাকতে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সেই উপায় বলে দিয়েছেন। সেদিন নাজাতের সমস্ত রাস্তা আমাদের সামনে দৃশ্যমান। কিন্তু আমাদের তো সেদিনের ব্যাপারে কোনো প্রস্তুতি নেই।

লেখাঃ রিফাত আহমেদ (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!

Post a Comment

0 Comments