ধর্ষণ রোধে : নারীর করণীয় - পর্দা

ধর্ষণ রোধে :  নারীর করণীয় - পর্দা

পুরুষের করণীয় -পর্দা ও পরিপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
ইসলাম র্সবক্ষেত্রে নারীকে সহজতা ও স্বাধীনতা দিয়েছে। পুরুষকে দিয়েছে কঠিন সব দায়িত্ব। সুতরাং সামাজিক এইসব অন্যায় অন্যাচারেও পুরুষের দায়িত্ব-করণীয় বেশি। কিন্তু আমরা কী দেখতে পাচ্ছি। শুধু নারীর পোশাক ও পর্দা নিয়ে আলোচনা। স্পেশালি ভন্ড সুশীলরা, 'ধর্ষণের কারণ শুধু পোশাক' এই বক্তব্যের ভিত্তিতে তারা দাড়িটুপি পরা যে কোনো শয়তানের সাথে আলেম-উলামাকেও একই পাল্লায় তুলে মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে একটা লড়াই কায়েম করার সুযোগ পেয়েছে। [দাড়ি থাকলেই কেউ হুযুর হয় না। রবীন্দ্রনাথেরও দাড়ি ছিল। আর আলেম তো হয়ই না; কে বুঝাবে জাহেলদেরকে]

'ধর্ষণের কারণ শুধু পোশাক' এই কথা সেইসব পুরুষ বলে যাদের সাথে কা শব্দটা অনায়াসে জুড়ে দেয়া যায়। তারা কুশিক্ষিত, অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, এমনকি সুশিক্ষিতও হতে পারে, কিন্তু দ্বীনের পূর্ণ জ্ঞান ডেফিনেটলি নেই।
অতএব, আপনি যদি ক্লিয়ার করে ধর্মবিদ্বেষীদের বলেনও যে, এটা মূলত প্রান্তিক ইসলাম, গাও গেরামের কালচারাল ইসলাম, আর তারপর তুলে ধরেন, ধর্ষণ রোধে ইসলাম সত্যিকারভাবে কী কী করতে বলে, শরয়ী বিচারব্যবস্থা, পাথর ছুঁড়ে হত্যা ইত্যাদিসহ অন্যান্য দিক; যার মূল গিয়ে দাঁড়াবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়, তখন তারা আপনাকে জঙ্গী, বর্বর, জেএমবি ইত্যাদি ট্যাগ দিবে।

ধর্ষণ রোধে পর্দাও প্রয়োজন। কিন্তু পর্দা অনেকগুলো কারণের একটা। এদিকে আমাদের দেশের কথিত সুশীলরা মনে করে পোশাকের কোনো দায়ই নেই। অবশ্য তারা এরকমই। পাশ্চাত্যের গোলামী করার নাম স্বাধীনতা মনে করে। ঘরের কাজকে নারীর উন্নতির অন্তরায় মনে করে, অথচ তার ঘরের কাজ করে দিয়ে যায় এক নারী-ই। ছোট ছোট পোশাক পরে 'হট-সুপার হট' ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত হওয়ার জন্য, তারপর বলে উত্যক্ত কেন করল? লিটনের ফ্ল্যাটে মিউচুয়াল সম্পর্ক করে বলে তাকে বিয়ের প্রলোভনে ফুঁসলানো হয়েছে! তারা এরকমই। পুরো বছর বিফ বার্গার আর চিকেন রাপ খেয়ে কুরবানীর সময় নাঁকি কান্নায় বেহুঁশ হয়ে যায়।

তারা বলবেই- পোশাক একেবারেই ধর্ষণের কারণ নয়।
কিন্তু আমরা মুসলিম, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখি, তারা কেন বলব, পোশাক ধর্ষণের কারণ নয়? যেখানে আল্লাহ সরাসরি কুরআনে বলছেন, শালীন পোশাক পরলে মুমিন নারীদের কম উত্যক্ত করা হবে।

আবার আমাদের একদল কেন বলব, শুধু পোশাকই ধর্ষণের কারণ? যেহেতু আল্লাহ কুরআনে পুরুষদেরও পর্দার নির্দেশ দিয়েছেন। দিয়েছেন কঠিন থেকে কঠিন শাস্তির বিধান। তবে কেন শুধু নারীকে পোশাকে কথা বলা হবে?

সেইসব ভাইদের কি লজ্জা করে না, যারা শুধু নারীকে পর্দার কথা বলেন? নিজের ভেতর থেকে কি মুনাফিকির দুর্গন্ধ আসে না?

যেহেতু দুনিয়াতে নারী পুরুষ দুই শ্রেণীর মানুষই আছে এবং এই দুটো শ্রেণীই আল্লাহর বিধান মেনে চলার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়াতে আছি, সুতরাং সর্বক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই করণীয় বর্জনীয় আছে।
ধর্ষণ রোধেও মুমিন নারীর করণীয়- পর্দা করা।

আর মুমিন পুরুষের করণীয় - দৃষ্টি নিচু রাখা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, এবং শরয়ী শাসন প্রতিষ্ঠা করা, যাতে বদদ্বীন কেউ এ ধরনের পাপ করার সাহস করতে না পারে।

সেইসব ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে যারা শুধু আজ ইস্যু দেখে নয়, বরং নিয়মিতই শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ফিকির করছেন, অন্তত কথা বলছেন।

আর যাদের মুখে কাপুরুষোচিত শুধু একটা কথা - পর্দা করো, তাদের বলছি -ভাই, পর্দা করবে নারী। আপনি কী করবেন? যে পর্দা করে না তাকে ধর্ষণ করবেন? দুনিয়ার সব হিন্দু খ্রিস্টান নারীকে ধর্ষণ করবেন? ইসলামের অন্ত-আন্ত খুঁজে দেখুন আপনাকে এমন কিছু করতে কোথাও বলা হয়েছে কিনা। আপনাকে নারীর প্রতি কুদৃষ্টি কেন, দ্বিতীয়বার সুদৃষ্টি নিক্ষেপ করতেও নিষেধ করা হয়েছে, সে নারী পর্দায় থাকুক অথবা না থাকুক। তাহলে শুধু নারীর পোশাক নিয়ে নসীহত করলে চলবে কেন?

আপনারা নারীকে পর্দা করতে বলুন, কিন্তু আপনারাও পর্দা করুন। একে অপরকে উৎসাহিত করুন পরনারীর প্রতি দৃষ্টি না দেয়ার ব্যাপারে। এলাকার যুবকদের ডেকে আল্লাহর আযাব সম্পর্কে সতর্ক করুন। ফেসবুকের পোস্টে মা বোনদের সম্মান করতে শেখান। বিশেষ করে ইসলামী শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখান। না হলে ধর্ষণ প্রতিরোধ তো দূর, আপনাদের কাছ থেকে দ্বীনের ভুল বার্তা পেয়ে ঘরে ঘরে জন্ম নিবে ধর্মবিদ্বেষী নারীবাদ।
সমাপ্ত

লেখাঃ মাজিদা রিফা (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)


আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!

Post a Comment

1 Comments